চরবৃত্তিতে অনন্য ক্ষুদে ড্রোন ব্ল্যাক হর্নেট

আমরা হলিউডের মুভিগুলোতে হরহামেশাই ক্ষুদ্রাকৃতির স্পাই ড্রোন দেখতে পাই। শুধু সিনেমাতেই না, বাস্তবেও কিন্তু সেসবের অস্তিত্ব আছে। এমনই একটি ক্ষুদে ড্রোনের নাম ব্ল্যাক হর্নেট।

আমেরিকার বৃহৎ সামরিক সরঞ্জাম প্রতিষ্ঠান ফ্লির সিস্টেমের অধীনে নরওয়ের প্রক্স ডায়নামিক ২০০৮ সালে চালকবিহীন ক্ষুদে ড্রোন নিয়ে কাজ শুরু করে প্রায় ৩ বছর চেষ্টায় সফল হয়। ২০১২ সালে প্রক্স ডায়নামিক ব্ল্যাক হর্নেট ন্যানোর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে।

ব্ল্যাক হর্নেট ড্রোন দেখতে একদম খেলনা হেলিকপ্টারের মতো। লেটেস্ট মডেলের ৬.৬ ইঞ্চি লম্বা এই ড্রোনটির ওজন মাত্র ৩৩ গ্রাম। খুব সহজেই একে পকেটে বহন করা যায়। একটি কন্ট্রোলার ডিভাইসের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ব্যাটারিতে ফুল চার্জ থাকাবস্থায় ঘন্টায় সর্বোচ ২১ কিলোমিটার বেগে টানা ২৫ মিনিট উড়তে পারে এ ড্রোন। ওড়ার সময় শব্দ এতটাই কম হয় যে, সর্বোচ্চ ১০০ মিটার উচ্চতায় ওড়ার সময় ড্রোনটি দেখে অনেকেই একটি ছোট পাখি ভেবে ভুল করতে পারেন।

একটি ব্ল্যাক হর্নেট সর্বনিম্ন -১০ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ +৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়, জিপিএস কাজ করে না এমন জায়গাতেও উড়তে পারে অনায়াসে। এর মাধ্যমে কোনো দুর্গম গুহায় ওত পেতে থাকা শত্রুপক্ষ বা আটকে পড়া শ্রমিক কিংবা অভ্যন্তরীণ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব।

ব্ল্যাক হর্নেট ড্রোনে রয়েছে ৩টি বিশেষ ধরনের উন্নতমানের ক্যামেরা, যেগুলো দিনে এবং রাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে সক্ষম। এর একটি বিশেষ সুবিধা হলো, যদি শত্রুপক্ষের কাছে কোনোভাবে ধরা পড়ে যায়, তবে শত্রুপক্ষের বোঝা সম্ভব নয় এর মাধ্যমে তাদের কোন কোন তথ্যগুলো ফাঁস হয়েছে। কারণ ব্ল্যাক হর্নেটকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, এটি কেবল কন্ট্রোলার ডিভাইসেই লাইভ ভিডিও ও স্থিরচিত্র প্রেরণ করে থাকে, ড্রোনটির আলাদা কোনো স্টোর নেই যেখানে ভিডিও সংরক্ষিত থাকবে।

ব্ল্যাক হর্নেট ন্যানোতে বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ড্রোনটির ব্যবহারকারী চমৎকার কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন। যেমন, কোনো কারণে যদি কন্ট্রোলার ডিভাইসের সাথে ড্রোনটির যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটে, তবে এটি যেখান থেকে ওড়ানো হয়েছিল ঠিক সেই জায়গাতে চলে আসবে। তাছাড়া এটি ওড়ানোও বেশ সহজ, মাত্র ৩০-১২০ সেকেন্ডে সময় নেয় যেকোনো মিশনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হতে।

অন্যান্য ড্রোনের চেয়ে খরচ তুলনামূলক কম হওয়াতে আন্তর্জাতিকভাবে ব্ল্যাক হর্নেট ন্যানোর বেশ চাহিদা তৈরি হয়েছে। হওয়াটাও স্বাভাবিক, কারণ দুর্গম অঞ্চল বা দুর্ধর্ষ শত্রু অবস্থানের উপর গোপন নজরদারিতে এটি নিঃসন্দেহে অতুলনীয়।

The post চরবৃত্তিতে অনন্য ক্ষুদে ড্রোন ব্ল্যাক হর্নেট appeared first on Techzoom.TV.

Post a Comment

0 Comments