সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্মার্টফোনে প্রতিনিয়তই নতুনত্ব আসছে, উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। বিশেষত ক্যামেরা বিভাগ। সম্প্রতি বেশকিছু কোম্পানি অত্যাধুনিক ক্যামেরা সেন্সর ও সফটওয়্যার নিয়ে হাজির হয়েছে। যদিও অনেকেই মনে করেন উদ্ভাবনে স্থবিরতা এসেছে, কিন্তু বাস্তবে বাজারে এখনো কিছু ফোন আছে, যেগুলোর ক্যামেরার কার্যকারিতা সত্যিকার অর্থেই চমকপ্রদ বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। গত আট মাস একাধিক হাই-এন্ড ফোন ব্যবহার করে, বাস্তব পরিস্থিতিতে পরীক্ষা চালিয়ে তারা তৈরি করেছেন সেরা সাতটি স্মার্টফোন ক্যামেরার তালিকা—
ভিভো এক্স২০০ প্রো
তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভিভো এক্স২০০ প্রো। এতে ব্যবহার হয়েছে স্যামসাংয়ের নতুন আইএসওসেল এইচপি৯ ২০০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো সেন্সর। ১/১.৪ ইঞ্চির সেন্সর ফরম্যাটে এটি চমৎকার পিক্সেল-বিনিং প্রযুক্তির মাধ্যমে ৫০ ও ১২ মেগাপিক্সেলের ছবি তোলে। অ্যাকশন ছবি, জুম শট ও ম্যাক্রো ফটোগ্রাফিতে ফোনটি দুর্দান্ত। মূল ক্যামেরাটি সনি এলওয়াইটি-৮১৮ সেন্সর, যা ভালো কনট্রাস্ট ও ডায়নামিক রেঞ্জ দেয়। চীনে এর দাম প্রায় ৮৩৬ ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ লাখ টাকার বেশি)।
অপো ফাইন্ড এক্স৮ আল্ট্রা
চারটি ৫০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং একটি অতিরিক্ত রঙ শনাক্তকারী সেন্সর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে অপো ফাইন্ড এক্স৮ আল্ট্রা। এক ইঞ্চির বড় সেন্সর, দ্রুত শাটার ও অসাধারণ বোকেহর কারণে এটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ৩০ গুণ পর্যন্ত জুমেও ছবির মান ভালো থাকে। দাম প্রায় ৯১০ ডলার (১ লাখ ১১ হাজার টাকার বেশি)।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫ আল্ট্রা
পশ্চিমা বাজারে পছন্দের শীর্ষে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫ আল্ট্রা। ২০০ মেগাপিক্সেলের প্রধান সেন্সর, ৫০ মেগাপিক্সেল আল্ট্রাওয়াইড ও ১০ মেগাপিক্সেলের পেরিস্কোপ জুম ক্যামেরা—সব মিলিয়ে ফোনটি চমৎকার ছবি তোলে। রঙ, টোন ও ভিডিও স্ট্যাবিলাইজেশনে এ ফোন অনেক উন্নত হয়েছে। এ স্মার্টফোনটির দাম ১ হাজার ২৯৯ ডলার (দেড় লাখ টাকার বেশি)।
আইফোন ১৬প্রো
৪৮ মেগাপিক্সেলের দুটি সেন্সর ও ৫এক্স টেট্রাপ্রিজম টেলিফটো লেন্সের মাধ্যমে ফোনটি দুর্দান্ত ছবি ও ভিডিও তোলে। ৪কে ডলবি ভিশন, অডিও জুম ও প্রফেশনাল ভিডিও ফিচারগুলো ফোনটিকে আলাদা করে তোলে। দাম ৯৯৯ ডলার (১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি)।
গুগল পিক্সেল ৯ প্রো
এতে আছে ৫০ মেগাপিক্সেলের প্রধান ক্যামেরা ও দুটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। নতুন এআই ফিচার থাকায় ছবি আরো ভালো তোলা যায়।
এটি দ্রুত ফোকাস করে, রঙ সুন্দর রাখে ও পোর্ট্রেট ছবি ভালো তুলে। ২০ গুণ পর্যন্ত জুমেও ছবি স্পষ্ট থাকে। ভিডিও তোলায় উন্নত স্থিরকরণ সুবিধা পাওয়া যায়। ৩০ গুণ পর্যন্ত জুম করলেও ছবি ফাটে না।
শাওমি ১৫আল্ট্রা
অনেকে মনে করেন, এটি একটি ‘আন্ডাররেটেড’ বা অবমূল্যায়িত ফোন। এতে আছে ২০০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ও ৫০ মেগাপিক্সেলের তিনটি ক্যামেরা। লাইকার সহযোগিতায় ক্যামেরার আউটপুট আর্টিস্টিক ও রঙে গভীরতা তৈরি করে। বড় সেন্সর ও দ্রুত ফোকাসের কারণে এটি ট্রাভেল ফটোগ্রাফির জন্য আদর্শ। দাম প্রায় ৯০৬ ডলার।
অনর ম্যাজিক৭ প্রো
ফোনটির বিশেষত্ব হলো ২০০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো সেন্সর ও এআই সেন্সিং। মূল ক্যামেরাটি রঙ, কনট্রাস্ট ও শার্পনেসে ভালো কাজ করে, তবে মাঝে মাঝে হোয়াইট ব্যালেন্সে সমস্যা দেখা যায়। অল্প আলোয়ও এটি ভালো পারফর্ম করে, তবে চলমান বিষয়বস্তুর ছবি তুলতে কিছু উন্নতির প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এখনকার স্মার্টফোনগুলো শুধু ফোন নয়, এগুলো পকেটের ভেতরে থাকা একেকটা আধুনিক ক্যামেরা। ফলে পেশাদার ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফির জন্য আলাদা ক্যামেরার আর প্রয়োজন না-ও হতে পারে।
The post ২০২৫ সালে সেরা সাত স্মার্টফোন ক্যামেরা appeared first on Techzoom.TV.
0 Comments