সরকারের সদ্য ঘোষিত ‘টেলিকমিউনিকেশনস নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি ২০২৫’ নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের তীব্র সমালোচনার পর এবার দেশের দুটি শীর্ষ মোবাইল অপারেটর রবি এবং বাংলালিংকও এই নীতিমালা নিয়ে হতাশা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তাদের মূল আপত্তির জায়গা হলো—মোবাইল অপারেটর কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বিদেশি মালিকানার বাধ্যবাধকতা, যা দীর্ঘমেয়াদী বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে বলে তারা মনে করছে। তবে একমাত্র গ্রামীণফোন এই নীতিমালাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।
রবি ও বাংলালিংকের মূল উদ্বেগ বিদেশি বিনিয়োগ
এক বিবৃতিতে রবি বলেছে, “টেলিকম নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং নীতি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ (সরকারের সঙ্গে) আলোচনার সময় দেওয়া কোনো প্রস্তাবকেই এটি প্রতিফলিত করে না। এই ত্রুটি গভীর হতাশাজনক, বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য, যাদের এই বাজারে দীর্ঘমেয়াদে থাকার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।”
অন্যদিকে, বাংলালিংক তাদের বিবৃতিতে কিছু ইতিবাচক দিকের (যেমন: সক্রিয় নেটওয়ার্ক ও স্পেকট্রাম শেয়ারিং) প্রশংসা করলেও তারাও মালিকানার সীমাবদ্ধতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলালিংক জানায়, “বাধ্যতামূলক মালিকানার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত আমাদের কিছু উদ্বেগ রয়েছে, যা বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে। তবুও আমরা ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
গ্রামীণফোনের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া
তিন অপারেটরের মধ্যে একমাত্র গ্রামীামীণফোন এই নীতিমালার বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছে। তারা বলছে, “আমরা বিশ্বাস করি, এটি এই খাতের জন্য উপকারী হবে।” তবে, একই সঙ্গে তারা দ্রুত একটি বাস্তবসম্মত বাস্তবায়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করার ওপরও জোর দিয়েছে, কারণ নীতির কার্যকর প্রয়োগ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের ‘দুর্নীতির’ আশঙ্কা
এর আগে, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এই নীতিমালাকে ‘পুরনো ব্যবস্থার নয়া বন্দোবস্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দুর্নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, নতুন নীতিমালায় গ্রাহকের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, দুর্নীতি কমবে এবং নেটওয়ার্কের মান উন্নয়ন হবে। কিন্তু এখানে নতুন যে সকল লাইসেন্সের বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তা একপ্রকার নয়া দুর্নীতির বন্দোবস্ত বলা যেতে পারে।”
সরকারের পক্ষ থেকে এই নীতিকে টেলিযোগাযোগ খাতে যুগান্তকারী সংস্কার হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, গ্রাহক অধিকার সংগঠন এবং দুটি প্রধান অপারেটরের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ফলে এর ভবিষ্যৎ বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
The post নতুন টেলিকম নীতি: গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের পর এবার রবি-বাংলালিংকের উদ্বেগ appeared first on Techzoom.TV.
 
 
 

0 Comments