বিশ্বব্যাপী ভিআর হেডসেটের বিক্রি কমেছে ১৪ শতাংশ

গ্রাহক চাহিদা কম থাকায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্বব্যাপী ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর) হেডসেটের বিক্রি কমেছে ১৪ শতাংশ। ভিআর হেডসেটের বাজারে প্রতিযোগিতা খুব একটা বাড়েনি। পাশাপাশি বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও এ সময় নতুন পণ্য কম উন্মোচন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে নেতৃত্ব ধরে রেখেছে মেটা। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির হিস্যা ছিল ৮০ শতাংশ। বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

অন্যদিকে অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) স্মার্ট চশমার বাজারে চাহিদার পুনরুদ্ধার হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে বিশ্বব্যাপী এআর স্মার্ট চশমার বিক্রি ৫০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কাউন্টারপয়েন্ট। বাজারটিতে চাহিদা বাড়ার মূল কারণ হলো প্রধান নির্মাতা এক্সরিয়াল ও রেনিওরের নতুন পণ্য।

ভিআর ও এআর উভয় প্রযুক্তিই থ্রিডি চিত্রের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বাস্তবতার’ উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করে। কিন্তু দুই ডিভাইসের কাজের পদ্ধতি অনেকটাই ভিন্ন।

বিশ্লেষকদের সংজ্ঞানুযায়ী ভিআর হেডসেট ব্যবহারকারীকে পুরোপুরি একটি ভার্চুয়াল জগতে নিয়ে যায়। যেখানে বাস্তব পৃথিবীর দৃশ্য সাধারণত দেখা যায় না। অন্যদিকে এআই চশমায় ব্যবহারকারী বাস্তব পৃথিবীর দৃশ্যে ভার্চুয়াল তথ্য বা গ্রাফিকস দেখতে পায়। তবে দুটোই স্মার্ট গ্লাস ডিভাইস।

মেটা সম্প্রতি ডিসপ্লে যুক্ত নতুন রে-ব্যান স্মার্ট চশমা উন্মোচন করেছে। এর পর পরই চলতি বছরের শেষে এআই/ভিআর হেডসেট ও স্মার্ট চশমার বিক্রি বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। বাজারের এ প্রবৃদ্ধির মূল চালক সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট মেটা।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, স্মার্ট গ্লাস খাতে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণের বৃহৎ পরিকল্পনা নিয়েছে টেক জায়ান্টটি। ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড রিয়ালিটি (ভিআর ও এআর) প্রযুক্তিতে চলতি বছর ফেসবুকের মালিক প্রতিষ্ঠানটির মোট বিনিয়োগ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালকে স্মার্ট গ্লাসের বছর বলে ঘোষণা দিয়েছেন মেটার প্রধান নির্বাহী (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ।

ভিআর ও এআর ডিভাইসের জনপ্রিয়তা খাতভেদে ভিন্ন। ভিআর হেডসেট মূলত গেমিং ও বিনোদনের জন্য বেশি ব্যবহৃত। কিন্তু দাম বেশি এবং ব্যবহার সীমিত হওয়ায় এর গ্রাহকচাহিদা কিছুটা স্থির বা ধীরে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এআই স্মার্ট চশমা তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। কেনাকাটা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ নানা ক্ষেত্রে এর চাহিদা বাড়ছে।

বাজার গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন বলছে, ভিআরের চাহিদা কমলেও চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক এআর-ভিআরের বাজার বেড়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। টানা দুই প্রান্তিক বিক্রি নিম্নমুখী থাকার পর সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি দেখা যায় বাজারে। এ প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল মাত্র একটি কোম্পানি—মেটা। শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ হিস্যা নিয়ে প্রথমে আছে কোম্পানিটি। শীর্ষ পাঁচের তালিকায় বাকি কোম্পানিগুলো হলো অ্যাপল, বাইটড্যান্স ও এক্সরিয়াল।

মেটার সিইও বলেন, ‘হেডসেট, চশমা ও এআই সিস্টেমের মাধ্যমে সবার কাছে ভবিষ্যৎ পৌঁছে দিতে কাজ করছে মেটা।’ কোম্পানিটি সম্প্রতি সাশ্রয়ী ভিআর হেডসেটও প্রদর্শন করেছে।

The post বিশ্বব্যাপী ভিআর হেডসেটের বিক্রি কমেছে ১৪ শতাংশ appeared first on Techzoom.TV.

Post a Comment

0 Comments