চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারে বিক্রি বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী চাহিদার কারণে বিশ্বব্যাপী বাজারটি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটি বলছে, গত প্রান্তিকের প্রতিবেদনে মটোরোলার নতুন রেজর ৬০ ক্ল্যামশেল ফোনের চাহিদা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। বিশেষ করে এখানে হুয়াওয়ের ব্যাপক চাহিদা দেখা গেছে।
কাউন্টারপয়েন্টের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক মেংমেং ঝাং বলেছেন, গ্রাহকরা বিশেষ করে আল্ট্রা-প্রিমিয়াম ‘বুক-টাইপ’ ফোল্ডেবলের দিকে ঝুঁকছেন, এর মধ্যে আছে মেট এক্স৬।
২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে হুয়াওয়ে যেসব ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বিক্রি করেছে, তার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই ছিল মেট এক্স৬ মডেল। এদিকে হুয়াওয়ের ধাক্কায় স্যামসাংয়ের বাজার হিস্যা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। তবে জুলাইয়ে শক্তিশালী চাহিদার কারণে বছরের বাকি সময়টুকু কোম্পানির বাজার হিস্যা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্লেষক জেনে পার্ক জানিয়েছেন, চলতি প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের বিক্রি আশানুরূপ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গ্যালাক্সি ফোল্ড ৭ সিরিজটি আগের মডেলের ভালো সাড়া পেয়েছে। পাশাপাশি আল্ট্রা-প্রিমিয়াম ফোল্ডেবল মডেলের বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের তথ্যানুযায়ী, স্যামসাংয়ের ফোল্ডেবল ফোনের জোরে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের বাজার হিস্যা কমেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাংয়ের বিক্রি বেড়ে বাজার হিস্যা ২৩ থেকে ৩১ শতাংশে উঠে গেছে। একই সময় অ্যাপলের হিস্যা কমে ৫৬ থেকে নেমেছে ৪৯ শতাংশে। এর পেছনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে ফোল্ডেবল ফোন।
জেনে পার্ক বলেন, ‘২০২৪ সাল ছিল ফোল্ডেবল ফোনের জন্য একটি রূপান্তরমূলক বছর। তবে আগামী বছর বাজারটি নিয়ে বেশ আশাবাদী বিশ্লেষকরা। ২০২৬ সালে অ্যাপলের ফোল্ডেবল ফোন উন্মোচনের বৈশ্বিক ফোল্ডেবল বাজারে বড় ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছেন তারা।’
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, ফোল্ডেবল ফোন নতুন কোনো উদ্ভাবন নয়। গুগল, স্যামসাং ও চীনা কোম্পানিগুলো কয়েক বছর ধরে এ ধরনের হ্যান্ডসেট বাজারে বিক্রি করছে। ২০২৪ সালে উচ্চ মূল্যের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের প্রায় ১১ শতাংশ ছিল ফোল্ডেবল। তবে আগামী বছর অ্যাপলের ফোল্ডেবল বাজারে আসার সঙ্গে ২০২৬ সাল মোবাইল ফোন শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের বছর হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে।
ফোল্ডেবল ফোন বর্তমানে বাজারের প্রিমিয়াম বিভাগে অবস্থান করছে। প্রিমিয়াম হ্যান্ডসেট সাধারণত ৮০০ ইউরো বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকার ওপরে ধরা হয়। তবে সবচেয়ে ভালো ফোল্ডেবল ফোনের দাম সাধারণত ১ হাজার ৩০০ ইউরো বা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বড় কোনো ব্র্যান্ড ফোল্ডেবল ফোন বাজারে এলে পুরো বাজারের চিত্র পাল্টে যাবে।
অনরের পশ্চিম ইউরোপের প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম কাও বলেন, ‘অ্যাপল আগামী বছর প্রথম ফোল্ডেবল ফোন উন্মোচন করতে পারে। তবে ফোনের সঠিক বিবরণ ও উন্মোচনের সময় এখনো প্রকাশিত হয়নি। এটি ফোল্ডেবল ডিভাইসের বাজার আরো শক্তিশালী করবে।’
The post পুনরুদ্ধারের পথে ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজার appeared first on Techzoom.TV.

0 Comments