প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা নজরদারি সরঞ্জাম তৈরির তালিকায় নাম লেখালো বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল সিকিউরিটি সারভেইলেন্স ম্যানুফ্যাকচার প্ল্যান্ট।
এই প্ল্যান্ট থেকেই সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের জন্য নজরদারী সরঞ্জাম তৈরি করবে হিকভিশন ও এক্সেল টেকনোলজিস। আট হাজার স্কয়ার ফিটের বেশি জায়গা জুড়ে নিবিষ্ট মনে ব্যস্ত কিছু কর্মী। লেন্স আর মনিটরের পিক্সেলে ভর করে তৈরি হচ্ছে একেকটা যন্ত্র।
এই যন্ত্রগুলোই বাসা-বাড়ি, ব্যাংক, স্কুল, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন জায়গার প্রয়োজনীয় নজরদারি চালাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরির কাজ করছে হিকভিশন সাউথ এশিয়া ও এক্সেল টেকনোলজিস নামের প্রতিষ্ঠান দুটি।
উন্নতমানের নিরাপত্তা ক্যামেরা তৈরি করতে আপাতত ৩৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মী কাজ করছেন। শিগগিরই প্রশিক্ষিত কর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোভিড মহামারীতেও সফলভাবেই এগিয়েছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। তাই দেশকেই বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো জায়গা মনে করছে হিকভিশন ও এক্সেল।
হিকভিশন- বিশ্বের এক নম্বর নিরাপত্তা নজরদারি সলিউশন ব্র্যান্ড। এই প্রতিষ্ঠানের অত্যাধুনিক নিরাপত্তা নজরদারি যন্ত্রপাতিই তৈরি হবে এখন বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে হিকভিশনের প্রথম ও জাতীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির সেবা ভবনে প্রাথমিক পর্যায়ের এই কারখানা স্থাপন করেছে।
চীনের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা নজরদারি সমাধান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কোম্পানি এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।
এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা বলেন, মাসে ৩০ হাজার পিস নিরাপত্তা ক্যামেরা তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে আমাদের। ভারতের পর বাংলাদেশে নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য-মেইড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে বিশ্ব বাজারে ছড়িয়ে দেয়া।
এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্সের পরিচালক মাসুদ হোসেন বলেন, হাইটেক পার্কে দুই একর জমির ওপর নিজস্ব কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এক বছরের মধ্যে তা শেষ হবে।
হিকভিশন সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট হুগো হুয়াং বলেন, চীনের বাইরে প্রথম ভারতে এবং দ্বিতীয় বাংলাদেশে এ ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন শুরু হলো। এ কারখানাকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।
উচ্ছ্বসিত হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ৮০টির বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ব্যবসা করছে সেখানে। দুবছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের কেন্দ্রে পরিণত হবে এই হাইটেক সিটি।
পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের ফ্লাগশিপ প্রকল্প হচ্ছে কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির উপর স্থাপিত বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি। সেখানে এ পর্যন্ত ৮০টি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী কোম্পানিকে জমি ও বিল্ডিং স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কোভিড আমাদের কিছুটা পিছিয়ে দিলেও আমরা এখন খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছি। প্রতিটি দিন, ঘন্টা কাউন্ট করা হচ্ছে। সেখানে এক্সেল টেকনলোজি এবং হিক ভিশন অসাধারণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এটা আমাদের দেশের সিকিউরিটির ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখবে।
তাছাড়া দুইটি ডেভেলপার কোম্পানিকে জমি উন্নয়ন এবং উচ্চ প্রযুক্তিবান্ধব শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে যুতসই স্থাপনা নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এসব জায়গায় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, আইওটি, বিপিও, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ডাটা সেন্টার প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে দেশি ও বিদেশি কোম্পানিগুলো কাজ করবে।
The post বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বসেরা নিরাপত্তা নজরদারি সরঞ্জাম appeared first on Techzoom.TV.
0 Comments