চলতি বছর আবারো চাঙ্গা হচ্ছে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বিক্রি ১ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসি। সংখ্যাটি সামান্য মনে হলেও আগের দশমিক ৬ পূর্বাভাসের তুলনায় এবারের প্রত্যাশা কিছুটা বেশি। এ প্রবৃদ্ধির মূল চালক হবে অ্যাপলের স্মার্টফোন।
নতুন পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার আগের চেয়ে ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। এর প্রধান দুটি কারণ হলো আইফোন বিক্রি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়া এবং বিভিন্ন দেশে পুরনো ফোন বদলে নতুন স্মার্টফোন কেনার প্রবণতা বৃদ্ধি।
বিশ্লেষকদের মতে, দুটি কারণেই ২০২৬ সাল ও তার পরও ইতিবাচক ধারা বজায় থাকতে পারে এ বাজারে। বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি অনিশ্চিত অবস্থায় থাকলেও (যেমন মূল্যস্ফীতি ও শুল্কের চাপ) স্মার্টফোন শিল্প ততটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং প্রত্যাশার তুলনায় বেশ শক্ত অবস্থানে টিকে আছে বলে মনে করছেন তারা।
আইডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি ১২৪ কোটি ইউনিটে পৌঁছবে। এ প্রবৃদ্ধির মূল চালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে অ্যাপলকে, যেখানে আইওএস ডিভাইসের বিক্রি বার্ষিক হিসাবে বাড়বে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের ভাষায়, স্মার্টফোন বাজারের চাপ অনেকটা সামলাচ্ছে আইফোন। ভোক্তাদের অনিশ্চিত মনোভাব কিছু অঞ্চলে চাহিদা কমালেও স্মার্টফোন কেনার প্রবণতা থেমে নেই। আকর্ষণীয় অফার, পুরনো ফোন বদলে নতুন কেনার সুযোগ এবং সুদমুক্ত কিস্তি অনেক ক্রেতাকে নতুন ফোন কিনতে উৎসাহিত করছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে, ২০২৪-২৯ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে প্রতি বছর গড়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে। তবে স্মার্টফোনের চাহিদা বিশ্বজুড়ে একই রকম নয়।
আইডিসির জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক নাবিলা পোপাল বলেন, ‘কিছু বাজারের চাহিদা বাড়া অন্য বাজারের বিক্রি কমে যাওয়া মেটাবে।’
তিনি উল্লেখ করেছেন, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন বিক্রি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় বাড়বে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং চীন ছাড়া এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে। এসব প্রবৃদ্ধি চীনে ১ শতাংশ কমে যাওয়া বিক্রিকে পূরণ করবে।
চীনকে চলতি বছর স্মার্টফোন বাজারের দুর্বল দিক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। আগে আইডিসির প্রত্যাশা ছিল চীনে এ বছর বিক্রি ৩ শতাংশ বাড়বে, কিন্তু এখন পূর্বাভাস ১ শতাংশ কমনো হয়েছে। এক্ষেত্রে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে সরকারি ভর্তুকি হ্রাস ও অর্থনৈতিক চাপ।
নাবিলা পোপাল বলেন, ‘স্মার্টফোন তৈরি করা কোম্পানিকে সে অঞ্চলে মনোযোগ দিতে হবে, যেখানে বিক্রি এখনো ভালো। সেখানে তারা নতুন সুযোগ খুঁজে পেতে এবং ব্যবসা বাড়াতে পারে।’
স্মার্টফোন বাজারে এখন একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে ফোল্ডেবল ডিভাইস। উচ্চ দাম ও নতুন প্রযুক্তির প্রতি সন্দিহান মনোভাবের কারণে আগে ফোল্ডেবল ফোনের চাহিদা কম ছিল। তবে বাজারে আরো শক্তিশালী স্ক্রিন ও কম দামের নতুন মডেল আসায় ভোক্তাদের আগ্রহ ধীরে ধীরে বাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ফলে সামগ্রিকভাবে স্মার্টফোন বাজারের আকারও সম্প্রসারিত হবে।
The post আইফোনের বিক্রি বাড়ায় বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস appeared first on Techzoom.TV.

0 Comments