আজকের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য স্ক্রিনশট নেয়া একটি সাধারণ ব্যাপার। যেকোনো তথ্য দ্রুত সংরক্ষণ করতে বা পরে কাজে লাগানোর জন্য আমরা অনেক সময় স্ক্রিনশট নিয়ে ফোনে রেখে দিই। কিন্তু সাইবার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এ স্ক্রিনশটগুলো আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের হাতে তুলে দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাইট মেক ইউজ অব (এমইউও) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফোনের গ্যালারিতে থাকা সাত ধরনের সাধারণ স্ক্রিনশট হ্যাকারদের জন্য তথ্য চুরির বড় উৎস হতে পারে। অজান্তেই এসব ছবি হতে পারে আপনার ব্যক্তিগত, আর্থিক বা পেশাগত তথ্য ফাঁসের কারণ। সেগুলো হলো-
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যালান্সের স্ক্রিনশট
অনেকে সঞ্চয় বা লেনদেন যাচাই করতে গিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যালান্সের স্ক্রিনশট নেন। কিন্তু এতে ব্যালান্স ছাড়াও অ্যাকাউন্ট নম্বরের অংশবিশেষ, সাম্প্রতিক লেনদেন বা ব্যাংকের লোগোসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থেকে যেতে পারে। হ্যাকাররা এগুলো ব্যবহার করে আপনার নামে ফিশিং বার্তা পাঠাতে বা অর্থ চুরি করতে পারে।
পাসওয়ার্ড বা লগ ইন তথ্যের স্ক্রিনশট
ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড, টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (২এফএ) কোড বা অন্য কোনো লগইন তথ্য স্ক্রিনশট নেয়া অনেকের অভ্যাস। কিন্তু এগুলো সাধারণ গ্যালারিতে রাখা নিরাপদ নয়, কারণ গ্যালারি এনক্রিপ্ট করা থাকে না এবং অনেক অ্যাপই এসব ছবি অ্যাকসেস করতে পারে।
সরকারি পরিচয়পত্র ও ভ্রমণ নথিপত্র
পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা বোর্ডিং পাসের স্ক্রিনশট রাখা অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু এসব স্ক্রিনশটে আপনার নাম, জন্মতারিখ, পরিচয় নম্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে, যা চুরি হলে হ্যাকাররা আপনার পরিচয় জালিয়াতিতে ব্যবহার করতে পারে।
ব্যক্তিগত কথোপকথনের স্ক্রিনশট
টেক্সট মেসেজ, ই-মেইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যক্তিগত বার্তার স্ক্রিনশট অনেকে সংরক্ষণ করেন। কিন্তু এতে ফোন নম্বর, ইউজারনেম বা ব্যক্তিগত আলোচনা থেকে যেতে পারে, যা ফাঁস হলে ভুলভাবে ব্যাখ্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং তা ব্ল্যাকমেইল বা প্রতারণার হাতিয়ার হতে পারে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যাদি
প্রেসক্রিপশন, টেস্ট রিপোর্ট বা হাসপাতালের বিলের স্ক্রিনশটে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য তথ্য থেকে যায়। এগুলো ফাঁস হলে শুধু গোপনীয়তা নষ্টই নয়, বরং প্রতারণা বা সামাজিক বিপদের শিকার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
অনলাইন শপিং কনফার্মেশন বা ই-টিকিট
অনলাইনে কেনাকাটা বা কোনো অনুষ্ঠানের ই-টিকিটের স্ক্রিনশটে কিউআর কোড বা বারকোড থাকে, যা কেউ স্ক্যান করে ব্যবহার করে ফেলতে পারে। অনেক সময় এগুলো অনলাইনে বিক্রিও করে দেয় চোরচক্র।
অফিসের নথিপত্রের স্ক্রিনশট
কাজের ফাইল, ক্লায়েন্ট ডেটা বা প্রজেক্ট পরিকল্পনার স্ক্রিনশট যদি ফোনে থেকে যায় এবং তা ফাঁস হয়, শুধু চাকরি হারানোর ঝুঁকিই নয়, প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সাইবার জগতে ছড়িয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত স্ক্রিনশট ফোল্ডারটি পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনীয় নয় এমন সব ছবি ফেলে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি কোনো স্ক্রিনশট রাখতে হয়, তা হলে সেটি পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত বা নিরাপদ ফোল্ডারে সংরক্ষণ করতে হবে। আরো ভালো হয় যদি তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট অফিশিয়াল অ্যাপে রাখা যায়, যেগুলোয় ডেটা সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকে।
The post ফোনের গ্যালারিতে থাকা ৭ স্ক্রিনশট হতে পারে হ্যাকারদের টার্গেট appeared first on Techzoom.TV.
0 Comments