বিশ্বব্যাপী ই-মেইল ব্যবহার করছে প্রায় ৪৫০ কোটি মানুষ

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫৫২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এর মধ্যে ই-মেইল ব্যবহার করছে প্রায় ৪৫০ কোটি মানুষ, যা ২০২৭ সাল নাগাদ ৫০০ কোটির কাছাকাছি পৌঁছতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ডাটা বিশ্লেষণ প্লাটফর্ম ডিমান্ডসেইজ।

ডিজিটাল প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের সঙ্গে মানুষের অনলাইনে সংযুক্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। একই সঙ্গে ইন্টারনেট মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পরিষেবাগুলোর একটি হলো ই-মেইল, যা বিশ্বব্যাপী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী সংখ্যার কাছাকাছি। সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্সসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত আছে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ই-মেইল এখনো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও লাভজনক যোগাযোগমাধ্যম। গত দুই বছরে ইলেকট্রনিক মেইল পরিষেবায় যুক্ত হয়েছে ১১ কোটি মানুষ। গবেষণায় এটাও দেখা গেছে, ৫৮ শতাংশ ব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যম দেখার আগে তাদের ই-মেইল চেক করেন।

ডিমান্ডসেইজের তথ্যানুযায়ী, প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৬ হাজার ১৬০ কোটি ই-মেইল আদান প্রদান হয়, যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু গুগলের জিমেইলই ১৮০ কোটি ব্যবহারকারীকে সেবা দিচ্ছে। পরিসংখ্যান আরো বলছে, ৯৯ শতাংশ ব্যবহারকারী প্রতিদিন অন্তত একবার তাদের ইনবক্স চেক করেন। কেউ কেউ দিনে ২০ বারও ই-মেইল খুলে দেখেন।

লেখক ও বিশেষজ্ঞ ফিলিপ ইঙ্গার বলেন, ‘৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার হচ্ছে ই-মেইল। আগে যেসব বার্তা মৌখিকভাবে, ফ্যাক্স বা হাতে লেখা নোটে পাঠানো হতো, এখন তা মূলত ই-মেইলের মাধ্যমে আদান প্রদান হয়। ই-মেইলের সুবিধা হলো এটি স্পষ্টভাবে ও দ্রুত লেখা যায়, একসঙ্গে এক বা একাধিক প্রাপকের কাছে পৌঁছায় এবং কাগজভিত্তিক যোগাযোগের তুলনায় কম জায়গা লাগে।’

তার মতে, প্রাপক ই-মেইল এবং এতে থাকা তথ্যকে নিজের পছন্দমতো ফোল্ডারে সংরক্ষণ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি একটি সহজে ব্যবহারযোগ্য ও মূল্যবান তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে।

ইতিহাসের নথিপত্র বলছে, বিশ্বের প্রথম ই-মেইল পাঠানো হয় ১৯৭১ সালে। এটি পাঠিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রোগ্রামার রে টমলিনসন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বোল্ট, বেরানেক অ্যান্ড নিউম্যানে (বিবিএন) কর্মরত টমলিনসন তখন বিভিন্ন কম্পিউটারে বার্তা পাঠানোর জন্য ‘সেন্ড মেসেজ’ নামের একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন।

ফিলিপ ইঙ্গার জানান, তিন মিটার দৈর্ঘ্যের নেটওয়ার্ক কেবলের মাধ্যমে দুটি কম্পিউটারের মধ্যে প্রথম ই-মেইল পাঠাতে সক্ষম হন টমলিনসন। ই-মেইল পাঠানোর সময় টমলিনসন প্রাপকের ঠিকানা তৈরি করার জন্য ইউজারনেম ও কম্পিউটারের নামের মধ্যে অ্যাট দ্য রেট (@) চিহ্ন ব্যবহার করেছিলেন। এর মাধ্যমে ঠিকানার দুই অংশকে আলাদা করা হয়েছিল। টমলিনসন ‘@’ চিহ্নটি কোনো কিছু বাছবিচার না করে বেছে নিয়েছিলেন। তখনকার সময়ে এটি খুব একটা ব্যবহার হতো না। তবে প্রথম ই-মেইল ঠিকানাগুলোয় ডটকম বা ডটনেটের মতো এক্সটেনশন ছিল না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ই-মেইলের ব্যবহার বেড়েছে ব্যাপক হারে। ডিমান্ডসেইজের তথ্যানুযায়ী, ৮১ শতাংশ ব্যবহারকারী ই-মেইল পড়া এবং উত্তর দেয়ার জন্য হাতে থাকা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন।

The post বিশ্বব্যাপী ই-মেইল ব্যবহার করছে প্রায় ৪৫০ কোটি মানুষ appeared first on Techzoom.TV.

Post a Comment

0 Comments